মোঃ শাহিদুল ইসলাম সবুজ,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ‘জুলাই স্মরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৭ জুলাই, ২০২৫ সকালে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় কনফারেন্স কক্ষে জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন,পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শুরু হওয়া আলোচনা সভা বিকেলে শেষ হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য এম জাকির হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ এইচ এম কামাল, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, আইন অনুষদের ডিন মুহাম্মদ ইরফান আজিজ, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ এমদাদুর রাশেদ ও রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচানা বিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য-সচিব মো. অলি উল্লাহ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) ড. মো. আশরাফুল আলম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, পরিবহণ প্রশাসক প্রফেসর ড. আহমেদ শাকিল হাসমী, বিদ্রোহী হলের প্রভোস্ট, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রফেসর ড. তারানা নুপুর, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তানজিল হোসেনসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘৫ আগস্টেরপর আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে ও কাজ করতে পারছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করতে কাজ করে যাচ্ছি। বিগত সময়ে যারা বঞ্চিত হয়েছে তাদের অধিকাংশের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে যারা জুলাই আন্দোলনে বাধা প্রদান করেছে এবং আন্দোলনকারীদের নির্যাতন করেছে তাদের বিচার করতে হলে স্বাক্ষ্য, প্রমাণ, ফাইল ও ফুটেজ প্রয়োজন। যাদের তথ্য প্রমাণ পেয়েছি তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আর যাদের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পাওয়া যাচ্ছে না, তোমাদের কাছে থাকলে তোমরা তা আমাদের তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করে বিচারে সহযোগিতা করো।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর বিগত ৫৫ বছরে জুলাই স্পিরিটের মতো ঐক্যবদ্ধ আর কখনোই হয় নি। এই স্পিরিট আর কখনো বিলুপ্ত হবে না। ভবিষ্যতে কোন সরকারই অন্যায় করে বেশিদিন টিকে থাকতে পারবে না।’ আন্দোলনে নিজের অংশগ্রহণের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘৫ই আগস্ট ভোরবেলায় কারফিউ ভঙ্গ করে, বৃষ্টিতে ভিজে প্রথমে শহিদ মিনার এবং পরে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে অন্যান্য সহকর্মীদের সাথে আন্দোলনে শরীক হই।’
ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। উক্ত কমিটি ইতোমধ্যেই কয়েকটি সভাও করেছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় এবং অন্তবর্তী সরকারের সময় নির্বাচন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কমিটি কাজ করছে।
আলোচনা সভায় আহত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাংবাদিকবৃন্দ জুলাই আন্দোলনে তাদের অভিজ্ঞতা এবং আন্দোলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।