জলিলুর রহমান জনি সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, যিনি চরমোনাই পীর নামেও পরিচিত, সম্প্রতি এক গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন যেখানে তিনি দেশের বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির সমালোচনা করেন এবং পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির পক্ষে জোরালো যুক্তি দেন।
গত ৮ আগস্ট, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার খুকনী হাইস্কুল চত্বরে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চরমোনাই পীর বলেন, "পিআর পদ্ধতি নতুন আবিষ্কার নয়। এই পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থায় জনগণের সবার মতামত সংসদে প্রতিফলিত হয় এবং একক আধিপত্যবাদ বা ফ্যাসিবাদী প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বিশ্বের প্রায় ৯১টি দেশে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
তিনি বলেন, "একটি দল পিআর পদ্ধতি বুঝতে পারে না এবং তারা বলে, ‘পিআর খায় না, গায়ে দেয়।’ এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে জনগণের মতামতকে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। ৬০ শতাংশ মানুষের মতামত উপেক্ষা করে ৩০-৪০ শতাংশ ভোটে নির্বাচিতরা কার্যকরভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারবে না।" চরমোনাই পীরের মতে, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়সংগত নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য পিআর পদ্ধতি সবচেয়ে উপযোগী।
এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আন্দোলন এনায়েতপুর থানা শাখার সভাপতি মুফতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মজিবুর রহমান এবং দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) হাজী মুফতি শেখ মুহাম্মদ নুরুন নাবী। এছাড়া কেন্দ্রীয় কৃষি ও শ্রম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মুফতি মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ, সিরাজগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুস সামাদ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের ইসলাম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মুফতি মাহমুদুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোতালিবুর রহমান সাইফি এবং ও এনসিপি প্রতিনিধি মুছা হাসেমি বক্তব্য রাখেন।
চরমোনাই পীর আরও উল্লেখ করেন যে, "পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সংসদে আসতে পারবেন। এজন্য একটি দল অস্থির হয়ে পড়েছে এবং ভিত্তিহীন সমালোচনা করছে।"
গণ সমাবেশের শেষে সিরাজগঞ্জের চারটি সংসদীয় আসনে প্রার্থিতা ঘোষণা ও প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে এনায়েতপুর, বেলকুচি-চৌহালী ও শাহজাদপুর এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় হাতপাখা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করা হয়।
এই সমাবেশের মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় পিআর পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা এবং এর সম্ভাব্য সুফল নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদ্ধতি বাস্তবায়িত হলে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে এবং গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পিআর পদ্ধতি ভোটারদের মতামতকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে সক্ষম এবং এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুষম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়। তবে এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত্য প্রয়োজন যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
অতএব, চরমোনাই পীরের বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে যা ভবিষ্যতে পিআর পদ্ধতির সম্ভাব্য বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন দৃষ্টিকোণ সৃষ্টি করতে পারে।
সম্পাদক : মোঃ জহির , উপদেষ্টা : জসিম উদ্দিন খোকন ,বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: ফোন: 𝟎𝟏𝟔𝟐𝟗𝟏𝟎𝟎𝟗𝟐𝟔
বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: 𝟎𝟏𝟔𝟎𝟖𝟔𝟗𝟕𝟖𝟗𝟗
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত