রুবেল ইসলাম, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ছাত্রাবাস ভবনের ছাদ ধসের ঘটনার পর তদন্তে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) একটি প্রতিনিধি দল।
রবিবার (৩ আগস্ট) তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত ঘটনাস্থলটি।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের পূর্ব পাশে অবস্থিত ১০ তলা ছাত্রাবাসের এক্সটেনশন পার্কিং ভবনের ছাদের ধস সংক্রান্ত নির্মাণ ত্রুটি ও তদারকির ঘাটতি খতিয়ে দেখতে তারা নির্মাণসাইটের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন।
তদন্ত দলের নেতৃত্বে ছিলেন ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান ভূঁইয়া। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) তানভির মোরশেদ, অতিরিক্ত পরিচালক সুরাইয়া ফারহানা এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক (প্রকৌশল) মোশারফ হোসেন।
পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিনিধি দল নির্মাণে ব্যবহৃত উপকরণ, খুঁটির সংখ্যা ও অবস্থান, নকশা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ঢালাইয়ের আগে অনুমোদনের চেকলিস্টসহ একাধিক বিষয় গভীরভাবে পর্যালোচনা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়।
উল্লেখ্য, তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মাকসুদুর রহমান জানান, “ছাদের ঢালাইয়ে ব্যবহৃত খুঁটির মান ও সংখ্যা যথাযথ ছিল না। নীতিমালার বাইরে বাঁশ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিরাপত্তা যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ক্লিয়ারেন্সেরও অস্তিত্ব নেই।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। কনসালট্যান্ট, বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং অনুমোদন প্রক্রিয়ায় কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা যাচাই করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, “যদিও রডের বিন্যাস নকশা অনুযায়ী হয়েছে, তবে প্রপিং ও স্ক্যাফোল্ডিং সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি। কোথাও কোথাও বাঁশ ব্যবহার ও ডেসিংয়ের ঘাটতি দেখা গেছে, যা স্পষ্টতই নির্মাণ নিরাপত্তার প্রতি অবহেলা।”
তদন্ত কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই বিকেলে নির্মাণাধীন ছাত্রাবাস ভবনের পার্কিং এক্সটেনশনের ছাদ ধসে পড়লে অন্তত ১২ জন নির্মাণশ্রমিক আহত হন।