
বাহাদুর চৌধুরী ১১ নভেম্বর ২০২৫
আশুলিয়ার ডিইপিজেড (ঢাকা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন) এলাকায় তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক। সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে ডিইপিজেড-এর প্রধান ফটকের সামনে একই মালিকানাধীন তিনটি প্রতিষ্ঠানের — অ্যাক্টর এক্সপোর্টিং লিমিটেড, সাউথ চায়না ও গোল্ড টেক্স — শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেন।
শ্রমিকরা জানান, তারা গত তিন মাস ধরে বেতন পাননি। এতে তারা চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন — অনেকেই বাসাভাড়া দিতে পারছেন না, পরিবারের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার সামর্থ্যও হারিয়েছেন।
বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে শিল্প পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং কয়েকজন শ্রমিক আহত হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভোলার জনপ্রিয় শ্রমিক নেতা আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন (জামাল)দৈনিক দক্ষিণের অপরাধ সংবাদ কে বলেন-
“শ্রমিকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এই দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছে। তারা যখন তিন মাসের বকেয়া বেতনের ন্যায্য দাবি তোলে, তখন তাদের ওপর জলকামান ব্যবহার করা অমানবিক ও নিন্দনীয়। শ্রমিকদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের বিনিময়ে যে মজুরি প্রাপ্য, তা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে।”
ভোলা সদর উপজেলা শ্রমিক পার্টি নেতা আরও বলেন,
বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতি মাস শেষে শ্রমিকদের বেতন বুঝিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু মালিকপক্ষ এই আইন অমান্য করছে — যা দেশের শ্রমবাজার ও শিল্প খাতের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।”
শ্রমিক নেতারা অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ, ভবিষ্যতে নিয়মিত বেতন প্রদান, এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস হলেও, শ্রমিকদের ন্যায্য প্রাপ্য বেতন ও মানবিক অধিকার আজও অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত রয়ে গেছে। আশুলিয়ার ডিইপিজেডের এই বিক্ষোভ সেই বাস্তবতারই প্রতিফলন।